Blog
/
Category
/
Details
মার্কেটিং মানে কি বুস্টিং?
ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে এসে অনেকেই মার্কেটিং এবং বুস্টিং এই দুটি ওয়ার্ড নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যান। কেননা কেউ কেউ বুস্টিংকে মার্কেটিং বলে ফেলেন, আবার কেউ কেউ মার্কেটিং-কে বুস্টিং। এই জন্যে যারা এই জগতে নতুন পা রাখছেন, তারা ভেবে বসতে পারেন দুটোই বুঝি একই! কিন্তু আসলে তা না। মার্কেটিং এবং বুস্টিং এর মধ্যকার তফাৎটা বাস্তবে বেশ বড়। আর আপনি যদি এই মার্কেটিং ফিল্ডে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে চান, তাহলে সেই তফাৎটা বুঝা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আর সেই কাজেই আপনাকে সাহায্য করতে এই আর্টিকেলে আলোচনা করব মার্কেটিং এবং বুস্টিং কেন একই জিনিস না। শুরুটা মার্কেটিং দিয়েই করা যাক।
মার্কেটিং কী?
আমরা সবাইই কমবেশি মার্কেটিং সম্পর্কে বুঝি। ছোট্ট করে বলতে গেলে মার্কেটিং হলো এমন একটি কৌশল যা দিয়ে আমরা কোনো পণ্য, সেবা কিংবা কোনো ব্র্যান্ডকে প্রমোট করি, যাতে কাস্টমারদের সাথে এনগেইজমেন্ট বাড়ে এবং কাস্টমার ঐ পণ্য নিতে আগ্রহী হয়। এই কাজটা করার জন্য মার্কেটিং টিমকে কিন্তু বেশ খাটাখাটনি করতে হয়। মার্কেট রিসার্চ থেকে শুরু করে কন্টেন্ট তৈরি করা, কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজ করা, বিজ্ঞাপন তৈরি ইত্যাদি অনেকগুলি কাজ করে যেতে হয় এই প্রসেসে। এই পুরো জিনিসটাকেই আমরা বলি মার্কেটিং করা।
তাহলে বুস্টিং বলতে কী বুঝায়?
বুস্টিং হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর একটা অংশ। বুস্টিং মানে বুঝায় কোনো প্লাটফর্ম ব্যবহার করে আপনার কন্টেন্টকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। এই কাজের জন্য ঐ প্লাটফর্মটিকে অর্থ প্রদানও করতে হয়। একে একরকম বিজ্ঞাপন করাই বলতে পারেন। বুস্টিং করে সাধারণত কোনো একটি নির্দিষ্ট পোস্ট বা কন্টেন্টকে নির্দিষ্ট একটি অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। আপনি নিশ্চয়ই ফেসবুকের নিউজফিডে এমন কিছু পোস্ট দেখে থাকবেন যেগুলির সাথে sponsored লিখা আসে। তার মানে হলো এই পোস্টের মালিক ফেসবুককে অর্থ প্রদান করে পোস্টটি বুস্ট করেছেন যাতে আপনিসহ আরো অনেকের কাছে এই পোস্টটি পৌঁছায়!
এবার আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে বুস্টিং করেও তো মানুষের কাছে আমরা প্রোডাক্ট বা কন্টেন্ট পৌঁছে দিচ্ছি।
তাহলে মার্কেটিং আর বুস্টিং এক হলো না কীভাবে?
যদিও মার্কেটিং আর বুস্টিং দুটোর মধ্যে একটা কমন উদ্দেশ্য রয়েছে। সেটি হলো অডিয়েন্সের কাছে কন্টেন্ট পৌঁছে দেয়া এবং এনগেইজমেন্ট বাড়ানো। কিন্তু এদের ফান্ডামেন্টাল কাজকর্ম ও উদ্দেশ্যগুলি দেখলে এদের মধ্যে যে বিশাল পার্থক্য আছে তা বুঝতে পারা যায়। চলুন দেখে নিই কীভাবে।
স্ট্র্যাটেজিক পার্থক্য: মার্কেটিং-এ কাজ করা হয় একটি লং-টার্ম প্ল্যান নিয়ে। কাস্টমারের সাথে রিলেশনশিপ বিল্ড আপ করা ও ব্র্যান্ডকে ডেভেলপ করা মার্কেটিং এর মূখ্য উদ্দেশ্য। এতে মার্কেট রিসার্চ করা, কাস্টমারের প্রয়োজন নিয়ে ভাবা, ব্র্যান্ডকে কাস্টমারদের কাছে বিশ্বস্ত মুখ হিসেবে পরিচিত করানো, কাস্টমারদের সাথে দীর্ঘ-মেয়াদী কানেকশন তৈরি করা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করা হয়।
অন্যদিকে বুস্টিং হলো মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত একটি কাজ, যেখানে মূল লক্ষ্য থাকে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য নির্দিষ্ট একটি পোস্টকে টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যাতে ইমিডিয়েট কোনো একটা রেজাল্ট পাওয়া যায়। এতে নির্দিষ্ট ঐ পোস্টটা হয়তো অনেক বেশি রিচ পায়, কিন্তু মার্কেটিং এর মত দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল আনতে পারেনা।
অডিয়েন্সের সাথে এনগেইজমেন্ট: মার্কেটিং এর প্রধান একটি উদ্দেশ্য হলো কাস্টমারের সাথে Meaningful interaction এবং কানেকশন তৈরি করা, যাতে কাস্টমারের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠানটি অনেক বিশ্বস্ত মনে হয় এবং তারা এর উপর ভরসা করতে পারে। এইজন্য মার্কেটাররা গল্প বলার মাধ্যমে কিংবা কাস্টমারদের সাথে সরাসরি কমিউনিকেশন করার মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে একটি বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে নেয়। শুধু বুস্টিং দিয়ে কাস্টমারের সাথে এরকম এনগেইজমেন্ট কিংবা ইমোশনাল কানেকশন বিল্ড করা যায় না।
ব্যবসার গ্রোথ নিশ্চিত করা: মার্কেটিং-এ এত এত কাজ করা হয় ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি ও রেপুটেশন গড়ে তোলার জন্য। কারণ এর মাধ্যমেই বুঝা যাবে আপনার প্রতিষ্ঠানটি কেন অন্যান্য প্রতিযোগি কোম্পানির চেয়ে ভাল। আর কে না জানে যে দীর্ঘস্থায়ী বিজনেস গ্রোথ এবং লং-টার্মে সাকসেস বজায় রাখতে হলে যেকোনো কোম্পানিরই লয়্যাল কাস্টমার বেইজের প্রয়োজন হয়।
অপরদিকে বুস্টিং করা হয় শুধু ছোটখাটো কিছু মিশন পূরণের কাজে। যেমন - ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা, লিড জেনারেট করা, কোনো নির্দিষ্ট অফার বা পণ্যের বিক্রি বাড়ানো, শর্ট-টার্ম গোল পূরণ করা ইত্যাদি।
আমি কি মার্কেটিং শিখব নাকি বুস্টিং?
মার্কেটিং এবং বুস্টিং যে দুটি আলাদা জিনিস, এটা বুঝার পর এবার এই প্রশ্নটা মাথায় আসা খুবই স্বাভাবিক। সত্যি বলতে বর্তমানে যেকোনো ব্যবসার জন্য মার্কেটিং এবং বুস্টিং দুটো কাজই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
মার্কেটিং শিখার মাধ্যমে আপনি consumer behavior, মার্কেট ডায়নামিক্স, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এসব বিষয় নিয়ে জানতে পারবেন। এছাড়াও এর মাধ্যমে আপনি স্ট্রাটেজিক চিন্তা করা, ক্রিয়েটিভ প্রবলেম-সলভিং করা, অ্যানালিটিক্যাল স্কিল অর্জন করা ইত্যাদি বিষয়ও আয়ত্ত করে ফেলতে পারবেন। এই সকল নলেজই আপনাকে ইফেক্টিভ মার্কেটিং ক্যাম্পেইন রান করা ও লং-টার্মের জন্য বিজনেস গ্রোথ ধরে রাখার কাজে সাহায্য করবে।
অন্যদিকে বুস্টিং শেখার মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন advertising platform ব্যবহার করে কীভাবে reach বাড়াতে হয় এবং স্পেসিফিক কিছু গোল পূরণ করা যেমন - ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা, সেল বৃদ্ধি করা ইত্যাদি করতে হয় সে বিষয়ে শিখে যাবেন।
শেষ কথা
মার্কেটিং এবং বুস্টিং-কে এক মনে করা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে এই আর্টিকেল পড়ে ফেলার পর আশা করি আপনি এবার এই দূটো কাজ সম্পর্কেই একটি ভাল ধারণা পেয়ে গেছেন। আপনি যদি নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল বাড়িয়ে তুলতে চান কিংবা একে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান, তাহলে এই দুটি স্কিলই আপনার আয়ত্তে থাকা উচিত।
RELATED ARTICLES
কেন টেলিসেলস গুরুত্বপূর্ণ? || ? (Importance Of Telesales)
বর্তমান বিশ্বে বিজনেস মডেল দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স এবং বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমের আসা সত্ত্বেও, টেলিসেলস এখনও মার্কেটিংয়ের একটি স্ট্রং মিডিয়া হিসেবে বিদ্যমান। টেলিসেলস বা টেলিফোনের মাধ্যমে সেলস এমন একটি প্রসেস, যেখানে বিক্রেতা ক্রেতার সাথে সরাসরি কথা বলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রির চেষ্টা করে। এটি শুধু সেলসই নয়, পাশাপাশি একটি কাস্টমার রিলেশন বিল্ডআপের একটি ইফেক্টিভ মেথড। তাই বুঝতেই পারছেন টেলিসেলস যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। এখন প্রশ্ন হলো, টেলিসেলস কেন গুরুত্বপূর্ণ? আ
কিভাবে আমি কপিরাইটিং প্রাকটিস করতে পারি? || How can I Practise Copywriting (Practice Guideline for Copywriter)
কপিরাইটিং এমন একটি স্কিল যা যে কোনো প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে। এটি শুধুমাত্র শব্দের ব্যবহার নয়, বরং রিডারদের এফেক্ট করা, তাদের আগ্রহ ক্রিয়েট করা এবং তাদের কাছে সঠিক মেসেজ পৌঁছানো নিয়েও কাজ করে। কপিরাইটার হিসেবে সফল হতে হলে আপনাকে এই স্কিলটি রেগুলার প্র্যাকটিস করতে হবে। আজকে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে আপনি কপিরাইটিং স্কিল প্র্যাকটিস করতে পারেন এবং সেইসাথে কিছু ইফেক্টিভ স্ট্রাটেজি নিয়ে, যা আপনার ডেভেলমেন্টকে হেল্প করবে। ১. প্রতিদিন লেখার অভ্যাস গড়ে তুলু
কপিরাইটার কেমন ক্যারিয়ার? || Is Copywriter A Good Career?(Introduction about Copywriter Job)
কপিরাইটিং বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ডিমান্ডিং প্রফেশান। ডিজিটাল বিপ্লব, অনলাইন মার্কেটিংয়ের উত্থান এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্টের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে কপিরাইটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া আজকাল অনেকের জন্য একটি আকর্ষণীয় চয়েজ হয়ে উঠেছে। কপিরাইটিংকে সাধারণত লেখালেখির একটি ক্রিয়েটিভ সেকশন হিসেবে দেখা হয় যেখানে একজন প্রফেশনাল রাইটার প্রোডাক্ট, সার্ভিস কিংবা প্রতিষ্ঠানের জন্য ইফেক্টিভ ও আকর্ষণীয় ইমেজ ক্রিয়েট করেন, যা সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের মার্কেটিংকে আরো ইজি ও সাকসেসফুল করে তোলে। এই কাজের ম
বিগিনাররা কিভাবে কপিরাইটিং শিখতে পারে? || How Do Beginners Learn Copywriting? || (Guideline for Beginners)
কপিরাইটিং হলো এমন একটি ক্রিয়েটিভ কাজ, যা একজন রাইটারকে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেলের জন্য বা রিডারের এ্যাটেনশন পাওয়ার জন্য রাইটিং স্কিল ইউজ করতে শেখায়। এটি বর্তমান যুগে একটি অত্যন্ত ডিমান্ডেবল জব, যা বিভিন্ন অর্গানাইজেশন এবং অনলাইন বিজনেসের জন্য অপরিহার্য। তাই এখন অনেকেই এই প্রফেশনে আসতে আগ্রহী। কিন্তু কিভাবে আসবেন বুঝতে পারছে না। যদি আপনি একজন বিগিনার হন এবং কপিরাইটিং শিখতে চান, তবে আজকের আলোচনাটি আপনার জন্য। চলুন একজন বিগিনার হিসেবে কিভাবে কপিরাইটিং শিখবেন সেই আলোচনার সংক্ষিপ্ত টপিকগুলো দেখে নেই
Relevant Live Courses for BUSINESS AND MARKETING